সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন। তার কারণেই দিনদিন উজাড় হচ্ছে গোয়াইনঘাটের বনাঞ্চল। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে চলে যাচ্ছে ভূমিখেকোদের।
পাশাপাশি দেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন রাতারগুলও। সাদ উদ্দিনের নিয়োজিত কর্তাব্যক্তিদের অনিয়ম-অবহেলার কারণেই দুর্বৃত্তরা খাবলে খাচ্ছে নৈসর্গিক এ জলাবন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বনে ভেতরে বেত ও নানারকমের গাছ কেটে নিয়ে গেছে। এলাকার অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায় কর্মকর্তা উদাসীনতার কারণে ভেতরের খালে পানি কমে আসলে অসাধু কর্মতাদের যোগসাজশে গাছ কাটা ও মাছ নিধন করা হয় অবাধে। এলাকার অনেকের অভিযোগ করেন ফরেস্ট কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্যরা রাতারগুল বনে নিরাপত্তা ব্যাপারে উদাসীন। হেমন্ত কালে বনের চারদিক দিয়ে বনে ভিতর ঢুকা যায়। সকালে ও সন্ধায় বেলায় অনেকে বেত ও গাছ নিয়ে যেতে দেখা মিলে।
গোয়াইনঘাটে সারী রেঞ্জ আওতাধীন বন বিভাগের ৫০৪ একর বনভুমি এলাকা নিয়ে রাতারগুল জলাবন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এটি বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন। পৃথিবীতে মিঠাপানির যে ২২টি মাত্র জলাবন আছে, “রাতারগুল জলাবন” তার মধ্যে একটি। রাতারগুল, বাগবাড়ি ও পূর্ব মহিষখেড় এলাকার ৫০৪ দশমিক ৫০ একর ভূমি নিয়ে মিঠাপানির এই জলাবনের অবস্থান। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এই বনে ৭৩ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। যার মধ্যে বনে রয়েছে বেত, কদম, হিজল, করচ ও মুর্তাসহ নানা জাতের জল সহিষ্ণু গাছ রয়েছে। এছাড়াও এই বনে ২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২০ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১৭৫ প্রজাতির পাখি এবং ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে। সারী রেঞ্জ আওতাধীন রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট হিসাবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। বন বিভাগ ও স্থানীয় জনসাধারণের সমন্বয়ে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করছে রাতারগুলে।
এই জলাবনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর। একে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট হিসাবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে। এছাড়াও ৩১ মে ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর ২০৪.২৫ হেক্টর বনভূমিকে বিশেষ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এলাকা হিসবে ঘোষণা কর হয়।
রাতারগুল ছাড়াও সারী রেঞ্জের আওতাধীন বনাঞ্চলের হজার হাজার একর বনভূমি এতামধ্যে উজাড় হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে সাদ উদ্দিন এ রেঞ্জে কর্মরত থাকার সুযোগে গোয়াইনঘাটের বনাঞ্চল ক্রমশ সরু হয়ে আসছ্।
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ অনুমতি ছাড়া আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারব না।
এ বিষয়ে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে রেঞ্জের প্রায় ২ হাজার একর ভ’মি জনগণের দখলে থাকার কথা স্বীকার করেন। তবে তার স্বজনদের কেউই বনাঞ্চলের কোন ভূমি দখল করেনি । তার দায়িত্ব আমলে তিনি রেঞ্জের প্রায় ৩শ’ একর ভূমি উদ্ধার করে বনায়ণ করেছেন বলে জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd