সিলেট ১লা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুুর রহমান ভুঁইয়া একজন সুদক্ষ ও মানবিক পরিচালক। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে ওই হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। তাঁর দায়িত্বপালন থেকে হাসপাতালের শৃঙ্খলা ও কর্মরতদের দায়িত্ববোধ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রমাগত উন্নতির দিকে চলছে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা। বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে রোগীদের ভর্তির হার। বেসরকারী হাসপাতালগুলোর উপর নির্ভরতা অনেকটা হ্রাস পেতে চলেছে সিলেটবাসীর। চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন ছাড়াও হাসপাতালের অবকাঠামোগত সংস্কার সাধনে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। হাসপাতালের ল্যাব্রটরির সরঞ্জামাদি ও ঔষধ সংকট দূরীকরনে অধিক মনযোগ দিয়েছেন তিনি। যাতে করে রোগীরা বাইর থেকে প্রয়োজনীয়
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধ কিনতে না পারে। একটি দালালমুক্ত ও প্রতারক বিহীন সিলেট ওসমানী হাসপাতল গড়তে ইতোমধ্যে তিনি অনেকটা সফল হতে পেরেছেন। তার দায়িত্ব পালন শুরুর পর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে ঔষধ চুরিসহ রকমফের ধান্দা ও প্রতাারনা। প্রত্যহ তিনি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ও আউটডোরে ঘুরে রোগীদের অবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা দেখেন এবং পর্যবেক্ষন করে থাকেন। ফলে হাপসাপতালে আগত রোগী ও এ্যাটেন্ডেন্স পরিচলকের উপর খুবই খুশি থাকেন। এতে করে সরকারের ভাবমূর্ত্তিও অনেকটা উজ্জল হয়ে উঠছে। ওসমানী হাসপাতালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবের পদায়নে সিলেটের মানুষজনের মুখে হাসি ফুটে ওঠেছে। হাসপাতাল তার অতীতের অনেকটা বদনাম ঘুচাতে শুরু করেছে।
একজন ডাক্তার পরিবারের সন্তান ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার তারাসাইল উপজেলার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ওই এলাকার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ফজলুর রহমান ও মাতা রাহিমা রহমান।
শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকাস্থ আদমজি ক্যান্টেনমন্টে পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি ও ১৯৮৫ সালে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকলে কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে সফলভাবে ওই হাসপাতালে ইন্টার্নিও করেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকাস্থ পিজি হাসপাতাল থেকে প্যাডি সার্জারি কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৯৪ সালে আর্মি
মেডিকেল সেন্টারে যোগদান করে কমিশন লাভ করেন। ২০১০-১১ সিলেট ফিল্ড মেডিকেল ইউনিটের দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১২ সালে কুমিল্লা সিএমএইচ হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব পান। ২০১২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা সিএমএইচ-এর সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সিএমএইচ-এর পরিচালক। ২০১৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ঢাকা
সিএমএইচ-এর ডেপুটি কমান্ডেন্ট-এর দায়িত্ব পালন করে। বৈশি^ক মহামারি করোনাকালে সততা ও নিষ্ঠার সাথে অসামান্য অবদান রাখার জন্য তিনি সেনা বাহিনীর ‘সেনা-গৌরব পদক’ প্রাপ্ত হন। এর আগে ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কুয়েত আর্মিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং এ সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কুয়েত সরকার কর্তৃক পুরস্কৃতও হন। ২০১৩ সালে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে আফ্রিকা মহাদেশের লাইবেরিয়ায় এবং ২০২১ সালে সেন্ট্রাল আফ্রিকা হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। অমায়িক চরিত্রের অধিকারী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং স্ত্রী রিনা হক খানসহ তিন সন্তানের জনক। এদের মধ্যে ১ মেয়ে ইঞ্জিয়ারিং সাইন্সে গ্রাজ্যুয়েশন করছে এবং ১ ছেলে মিরপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ক্যাডেট হিসেবে বিএমএ লং কোর্স করছে। অপর এক মেয়ে স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থী। সমাজ সেবায়ও রয়েছে ব্রিঃ জেনারেল মাহবুবুর রহমানের অনেক অবদান। তিনি নিজ এলাকায় একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন এবং গরীব-দুঃখী মানুষের ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান চাকরির পাশাপাশি মানবসেবার ব্রত নিয়ে কাজ করার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd