সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৫৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২২
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: নিউজার্সিতে মেয়ের জন্মদিনের রাতে স্বামীর হাতে খুন হওয়া একসন্তানের জননী সাইমা তাসনিম শাপলার (২৩) লাশ সিলেটের বিশ্বনাথে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার লাশ দেশে পৌঁছালে সন্ধ্যার পর জানাজার নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। শাপলা উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামের মৃত হাজী মখদ্দুছ আলীর একমাত্র মেয়ে।
নিহতের মা জাহানারা বেগম জানান, ‘গত ৪ জুন শনিবার শাপলার একমাত্র মেয়ে শাহিদা বেগম ফারিহার (৫) জন্মদিনের রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শাপলাকে গলাটিপে খুন করে তার পাষন্ড স্বামী আবদাল হোসেন। পরে, তাকে সেখানকার পুলিশ গ্রেপ্তার করলে সে খুনের দায় স্বীকার করে। ফারিহার জন্মদিন পালন করতে সেদিন আবদাল শাপলার নিউজার্সির বাসায় গিয়েছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাহানারা বেগম আরও জানান, ‘আমাদের প্রতিবেশী সমুজ আলীর ছেলে আবদাল হোসেনের সাথে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আমার মেয়ে শাপলার। ২০১৭ সালে সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়। কিন্তু শুরু থেকেই আমার মেয়েকে মেনে নিতে পারেননি আবদালের মা মিনারা বেগম ও বড়ভাই আক্তার। তারা সেখানে আমার মেয়েকে নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। বাংলাদেশ থেকে তাদেরকে ইন্ধন যোগাতো একই গ্রামের আঞ্জব আলীর ছেলে সুজন। খুন করার কিছুদিন পূর্বেও একবার শাপলাকে মারপিট করেছে আবদাল। আমার মেয়ে তার যন্ত্রণায় নিউজার্সি শহরে মেয়েকে নিয়ে একা থাকতো। আর আবদাল থাকতো তার মা-বাবার সাথে মিশিগান শহরে। আমার মেয়ের কাছে থাকা সব টাকাপয়সা আবদাল কেড়ে নিয়েছিল। ফোনে কথা হলে শাপলা আমাকে কান্নাকাটি করে বলতো, আবদাল পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। মেয়েদের সাথে ধারণ করা তার বিভিন্ন ধরণের ভিডিও শাপলাকে দেখিয়েই ফোন থেকে মুছে ফেলতো আবদাল।’
এদিকে, আজ সোমবার বিকেলে সাইমা তাসনিম শাপলার লাশ বাড়িতে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার স্বজনদের কান্নায় ভারী হয় আশপাশের পরিবেশ। একমাত্র সন্তানকে চিরতরে হারিয়ে চিৎকার করে কান্না করতে গিয়ে বারবার মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন শাপলার মা জাহানারা বেগম। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারী ও হত্যাকান্ডের পেছনে ইন্ধনদাতাদের শাস্তির জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাস্ট্রমন্ত্রীর কাছে আকুল দাবি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd