সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
এমন আত্মবিশ্বাসী আর সংগ্রামী একটি মেয়ে কেন হঠাৎ করে জীবনের ওপর হতাশ হয়ে ‘আত্মহত্যা’ করল তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাবলীর মা পারুল বেগম জানান, মেহিয়া আক্তার বাবলী (১৭) টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রী ছিল। কিছুদিন আগে তাকেসহ কয়েকজনকে হোস্টেল থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এই অপমান সইতে না পেরে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তিনি তদন্তসাপেক্ষ এর বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
পারুল বেগম জানান, ভারতেশ্বরী হোমসের আবাসিক হলে রান্না নিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে শিক্ষক ও রান্নাঘরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথাকাটাকাটি হয়। এ বিষয়ে হোমস কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানালে তারা হোমসে এসে অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমা চান। বাবলীর মাও ক্ষমা চেয়ে নেন যেন তার মেয়ে হোস্টেলে থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারে। কিন্তু হোমস কর্তৃপক্ষ ক্ষমা না করে আবাসিক হল থেকে বাবলীকে বের করে দেয়। পরে মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাইমহাটি গ্রামে এক বান্ধবী ও তার মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল বাবলী। বুধবার রাতে ওই বাসার একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাবলীর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ভারতেশ্বরী হোমসে যোগাযোগ করা হলে হোমস কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতেশ্বরী হোমসের নিয়মানুসারে বাবলীকে আবাসিক হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। বাবলী এখন হোমসের আবাসিক হলের ছাত্রী নয়। সে বাহিরে থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছে এটা তার পরিবারের ব্যাপার হোমসের নয়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুল হক মিজান বলেন, ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছে তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, পারুল বেগম ঢাকায় পার্লারের ব্যবসা করেন। পরীক্ষার পরই বাবলীর ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। ১৯৯৮ সালে বাবলীর বাবা মো. বখতিয়ারের সঙ্গে পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। শুধু মেয়ে হওয়ার কারণে বাবলীর জন্মের ছয় মাসের মাথায় তার মুখ, কান, পা ও পায়ুপথে ওষুধ খাওয়ার ড্রপারে করে পাঁচ দিন ধরে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছিল তার বাবা। পরে পারুলের সঙ্গে বখতিয়ারের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ সময় বাবলী ও তার মায়ের পাশে দাঁড়ায় অ্যাসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশন। বাবলীর কয়েক দফায় অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা, নিয়মিত শিক্ষাবৃত্তি এবং ঢাকায় মায়ের পার্লার ব্যবসার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেয় সংস্থাটি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd