সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
ইকরা ইসলামের প্রথম আপাত বাক্য। হে নবী আপনি পড়–ন। এর পর থেকে শিক্ষা ধীরে ধীরে শুরু হয়ে যায় এবং এক বিস্তার রূপ নিতে থাকে। শিক্ষাকেই কেন্দ্র করে আমাদের বেড়ে উঠা। একটি শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর সে যখন তার জননীর মুখ থেকে ভাষা শিখে নিজেকে উৎকৃষ্ট করে এটি তার পারিবারিক শিক্ষার এক পর্যায় শুরু হয়ে যায়। যখন সে মায়ের কোল থেকে মাটির সংস্পর্শে আসে অর্থাৎ সে যখন তার কচি পা দিয়ে টুক টুক হাটঁতে শুরু করে এবং অল্প অল্প কথা বলতে শেখে তখন তাকে দেখে নিজে অনেক আনন্দিত হই। তাকে আমরা যা বলি সে সেই কথাগুলোই অনুরূপ বলার চেষ্টাও করে। কিছু বলতে ফেললেও পুরোটা স্পষ্ট করে নয়। তার বাক যখন প্রথম শব্দটা মা বলে ডাকে তখন মনে হয় পৃথিবীর সব সুখ এখানেই নিহিত। বয়স যখন বাড়তে থাকে তখন শুরু হয় তাকে শিক্ষা দান করার পর্যায়। তাকে প্রতিদিন খাওয়ানো, ঘুম, খেলাধুলা সবকিছুই নিয়মমাফিক করতে হয়। পর্যায়ক্রমিকভাবে ধাপে ধাপে তার শিক্ষা জীবন শুরু হয়। শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ করে নিজের সন্তানাদির ক্ষেত্রে আমরা সবসময় তাদেরকে ভালো শিক্ষাটা দেয়ার জন্য একটু বেশী উদ্যোমী হয়ে উঠি।
আমরা প্রতিনিয়ত প্রত্যেকটি পরিবারে দেখতে পাই মা-বাবা-দাদা-দাদি-নানা-নানি-চাচা-চাচি সবাই পরিবারের ছোট সদস্যকে (বয়স যখন ৩ থেকে ৬) সকালবেলা ফজরের নামাজের পড়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়ার জন্য শিক্ষকদের নিকট অথবা নিজে সাথে নিয়ে শিক্ষা দেন। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর কখনো মা কখনো বাবা বই পুস্তকসহ তাকে সাথে নিয়ে বসে পড়েন। শুরু হয় প্রথম শিক্ষা অ,আ, ই, ঈ; অ,ই,ঈ,উ ইত্যাদির খেল। পরিবারের সবাই তার পেছনে ছুটে পড়েন তাকে শিষ্টাচার, নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা, নীতিশিক্ষা দেয়ার জন্য। জীবনের প্রত্যেকটি মুুহুর্ত তাকে সুযোগ দিবে এই শিক্ষাগুলো অর্জন করার জন্য। বয়স ৬ হয়ে গেলে তাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়। শুরু হয় তার জীবনের প্রাথমিক শিক্ষার পর্যায়। প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ করে তার উপর সেই দিকটাই বেশি চাপানো হয় সে যেনো সবসময় সত্য কথা বলে, বড়দের সম্মান করে, ছোটদের ¯েœহ করে এবং সবার সাথে ভালো হয়ে চলে। ধীরে ধীরে যখন ক্লাস বাড়তে থাকে তখন তাকে সময়ের সাথে মূল্যবোধ সম্পর্কে জ্ঞান দেয়া হয়। তাকে কোনো কিছুর বোধ শক্তির অনুভব করিয়ে দেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের গন্ডি অতিক্রম করে সে যখন মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নিত হয় তখন সে পড়ালেখার পাশাপাশি চিন্তা করার বোধশক্তিও অর্জন করে নেয়। সে বুঝতে শিখে পরিবারের কষ্টের সময় কিভাবে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। সে তখন পৃথিবীর জগত সম্পর্কে ধারণা নিতে থাকে। সে প্রতিনিয়ত প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরণের মানুষের সাথে মিলেমিশে করতে শিখে। সে চেষ্টা করে পড়ালেখায় ভালো করে জ্ঞান অর্জন করতে। সে চেষ্টা করে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করতে। সে ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বুঝার চেষ্টা করে। সে এই শিক্ষা নিয়ে বড় হতে থাকে যে কোনোদিন কোনো ক্ষেত্রে কোনোভাবেই দুর্নীতি করা যাবে না। সে এই শিক্ষা নিয়ে বড় হতে থাকে দুর্নীতি করা মহাপাপ। ক্লাস ও বয়স বাড়ার সাথে সাথে শেষ হয় তার মাধ্যমিক পর্যায়। উন্নিত হয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে। তখন তার সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকশিত হতে থাকে। সে পড়ালেখার পাশাপাশি চেষ্টা করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও মানব উন্নয়ণে কাজ করে কিভাবে একটু হলেও গরিবের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া যায়, কিভাবে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফুটানো যায়, কিভাবে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা যায়, কিভাবে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের ভালো ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়। এইসব বিষয় নিয়েও তার মধ্যে চিন্তার এক পাহাড় গড়ে উঠে। আপাতত শিক্ষার স্তর এখানেই শেষ করি। কেননা জন্ম থেকে কবর পর্যন্ত প্রত্যেকটি জায়গাই হচ্ছে শিক্ষা অর্জনের স্থর। এটা বলে শেষ করা যাবে না।
শিক্ষা অর্জন করা সহজ কিন্তু তাকে কাজে লাগিয়ে জ্ঞান অর্জন করা কঠিন। শিক্ষা নামক শব্দটিকে অন্ধকারের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে একমাত্র মানুষই পারবে। কেননা এটিকে অন্ধাকারাচ্ছন্ন করার মূল হেতু কিন্তু মানুষই। বর্র্তমান বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে অন্যায় এবং দুর্নীতি রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্টানে ভর্তি, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, ব্যাংক এবং বিভিন্ন সরকারি চাকুরীতে যোগ দিতে গেলে যোগ্যতা নয় টাকাই সবকিছু। আমরা সেই উদাহরণটা দুটি বিত্তবান ও সম্বলহীন পরিবারকে দেখলে বুঝতে পারি। একটি গরিব পরিবারের ছেলে খেয়ে না খেয়ে অনেক দূর পড়ালেখা করে যখন সে চাকুরিতে যোগ দিবে তখন যদি তাকে শুনতে হয় আপনাকে চাকুরি দিয়ে দিবো ১০ লক্ষ টাকা দিন। তখন সেই ছেলেকে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। সে আত্মহত্যা করেছে এটি অনেকে খারাপ মনে করতে পারেন, তবে সে আত্মহত্যা করে এটি শিক্ষা দিয়ে গেছে অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করতে নেই। সে শিক্ষা দিয়ে গেছে কীভাবে বীরপুরুষ হয়ে অমর হতে হয়। সেই একই চাকুরী একজন ধনী পরিবারের ছেলে যখন ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে যোগ দেয় তখন সে শিক্ষা দিলো কিভাবে দুর্নীতি করতে হয়। চারিদিক থেকে আশেপাশের লোকজনসহ সবাই খবর পেলেন ছেলেটি চাকুরি পেয়েছে কিন্তু তারা এটা জানতেন না যে সে অবৈধভাবে এটি অর্জন করেছে। সে যে এতোদূর পড়ালেখা করেছে তাও ছিলো হযবরল। শিক্ষিত সার্টিফিকেটগুলোও ছিলো টাকা দিয়ে কেনা।
শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় আমাদের মনুষ্যত্ববোধ, সততা এবং ন্যায়ের বিসর্জন দিয়ে দেই। আমি পরিলক্ষিত করলাম যে একজন অশিক্ষিত লোকের চরিত্র একজন শিক্ষিত লোকের চরিত্রের চাইতে একশ গুণ ভালো।
রাজনৈতিক পরিবেশে শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে দেখা যায় ক্ষমতাসীন ছাত্রদের কলেজের অধ্যক্ষও পর্যন্ত ভয় পান। তাদের মধ্যে কেউ একজন যদি ড্রপও হয় তাহলে স্যাররা তাদের ভয়ে সেই ড্রপকেও পাশে পরিণত করে দেন। তাদের মধ্যে ক্ষমতার এতোই মনোভাব চলে আসে তারা নিজেকে কলেজের শীর্ষ চাঁদাবাজেও পরিণত করে তুলে। একজন সাধারণ ছাত্রকে তারা পরীক্ষার হলে স্যারের সামনে ধমকায় তখন স্যারকে দাড়িয়ে তাকানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। একটি সাধারণ ছাত্রকে যখন কলেজ থেকে কোনো সার্টিফেকেট নিয়ে বের হতে হয় তখন কলেজের স্যাররাই আগে আগেই বলে দেন কাগজটা লুকিয়ে নিয়ে বের হইয়ো না হলে সমস্যা হতে পারে। সমস্যা বেশি কিছু না ঐতো বাহিরে গেইটে চাঁদাবাজরা দাড়িয়ে আছে তাদেরকে কিছু টাকা দিলে আপনি সুরক্ষিতভাবে কাগজ নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন। আফসোস করে বলতে হয় কলেজের যে দেয়ালে গুণি ব্যক্তিবর্গের কিছু দৃষ্টান্তমূলক বাণী ছিলো সেখানেও নেতাদের ফেস্টুন ও ব্যানার পরিলক্ষিত হয়। পরীক্ষার হলে যেদিন বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় পরীক্ষা চলছিলো তখন বেশিসময়ই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখতে হয়েছে। এরকম কোনো প্রশ্ন ছিলো না যে মাওলানা ভাসানি, জিয়াউর রহমান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক তাদের নামটাও লিখতে পারি। আজ উপলব্ধি করতে পারলাম বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা। বর্তমান বাংলাদেশে মানুষ রাজনীতি নামক শব্দটাকে অনেক ঘৃণ্য মনে করেন। আমার প্রশ্ন হলো কিন্তু কেনো। এটা সৃষ্টি করার মূল হেতু হলো বর্তমান বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি। ছাত্র রাজনীতির প্রকৃত অর্থ হলো ছাত্র অধিকার আদায়। কিন্তু তারা এটা থেকে দূরে সরে গিয়ে ছাত্ররাজনীতিকে ব্যবহার করে জ¦ালাও-পোড়াও ভাঙচুরের জন্য। কলেজের বেতন বৃদ্ধি সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে এরকম একটি মোটা অঙ্কের টাকা বহন করে পড়ালেখার খরচ চালানো। কিন্তু একজন ছাত্রও সেটার বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন বা প্রতিবাদ জানাবে না। সাধারণ ছাত্ররা করতে চাইলেও ক্ষমতাসীনদের ভয়ে তাদের পক্ষে সেটি আর সম্ভব হয় না। কিছু সংখ্যক ছাত্রদের জন্য আজ ছাত্ররাজনীতির এই করুণ দশা।
উচ্চ মাধ্যমিক বা ইঞ্জিনিয়ারিং করে যখন কোনো ছাত্র কোনো ভার্সিটিতে, মেডিকেলে ভর্তি হবে তার ক্ষেত্রে যোগ্যতার মূল্যায়ণ কমই হয়। হাজার সিট থাকলে তার ৩০০টি চলে যায় টাকায়, ২০০টি চলে যায় বাংলাদেশের সুনামধন্য মন্ত্রী, এমপিদের জন্য এবং বাকি যে ৫০০টি সিট রয়েছে যারা মেধাতালিকায় সুযোগ করে নেয় তাদেরকে কিছু হলেও টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হয়।
আমরা কি কখনো এটি চিন্তা করে দেখেছি আমাদের দেশের শিক্ষিত ছেলেরা চাকুরি করার জন্য বাহিরে কেনো চলে যায়। কারণ এদেশে সুশিক্ষিতদের কোনো মূূল্যায়ণ নেই। আর যারা ভালো শিক্ষায় শিক্ষিত, মেধাবী তাদেরকে সঠিক সম্মান দেই না বলে তারা বাহিরের দেশে গিয়ে অন্যদের গোলামী করে। নিজেকে তখন অসহায় মনে হয়।
আসলে আমরা হুজুগে চলি। যখন শিক্ষার্থীদের অবহেলাভাবে দেখা হয় তখন তাদের পড়ালেখার যে মনমানসিকতা থাকে সেটি নষ্ট হয়ে যায়। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদাহরণ দেই। যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক প্রয়োজন ১৪০ জন সেখানে ৭০ জন শিক্ষক দিয়েই কাজ চালানো হয়। যখন সকালের শিফট শেষ হয়ে বিকেলের শিফটে ক্লাশ শুরু হয় তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে উদ্যোমী হলেও শিক্ষকরা হাপিয়ে পড়েন। কারণ একজন শিক্ষক তার যতটুকু আয়ত্ত আছে তিনি ততোটুকুই করতে পারবেন। তার বাহিরে করতে পারবেন না। তাহলে কিভাবে একজন শিক্ষককে দিয়ে দুবেলা ক্লাস করানো হয়। তখন সেই শিক্ষার্থী মন থেকে চিন্তা করতে থাকে আসলে আমরা মনে হয় খারাপ স্টুডেন্ট তাই আমাদেরকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। সে এক ধরনের হীনমন্যতায় ভোগে।
আমরা ইন্টারনেটকে দোষারোপ করি প্রশ্নফাসেঁর জন্য। ইউরোপের দেশগুলোর দিকে যদি খেয়াল করি যারা ইন্টারনেটের জন্ম দেয় তাদের দেশে কেনো প্রশ্নফাঁস হয় না। কারণ তাদের দেশে এরকম মানুষ নেই যারা শিক্ষাকে অসুদুপায় অবলম্বন করে টাকা অর্জনের চিন্তা করে। আগে নিজেকে ঠিক করুন ইন্টারনেটের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ মানুষ বই না পড়ে গুগল এবং ইউটিউব থেকে অধিক পরিমাণ শিক্ষা অর্জন করতে পারে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে একটি শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। কারণ এই শিক্ষা ব্যবস্থার কোনো প্রয়োজন নেই যারা জিপিএ ৫ পেয়ে তার সঠিক ইংলিশ বলতে পারে না।
আমরা আমাদের সন্তানের শিক্ষা অর্জনের পিছনে শুধু সরকারকেই দোষারোপ করি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পরিবারই তার মূখ্য হেতু হয়ে দাড়ায়। আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে চিন্তামগ্ন হয়ে পড়ি। আমরা বিশেষ করে তাদের সেই দিকটা খেয়াল রাখি তারা যেনো কোনোভাবেও মিথ্যা কথা না বলে। তারা তাদের সন্তানদেরকে একটি রুটিনের মধ্য দিয়ে পরিচালনা করতে মা-বাবারা বেশী অগ্রণী থাকেন। কারণ তাদের একটাই আশা আমি আমার সন্তানকে পড়ালেখায় সবার চাইতে ভালো করে তুলবো। পড়ালেখায় ভালো হলেই সে সমাজে মূল্যায়ণ পাবে তার একটি ভুলভ্রান্তি মনের মধ্যে চলে আসে। আমি পড়ালেখা অর্জন করার বিরোধিতাও করছি না। তবে আমাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা অর্জনের পেছনে মিথ্যা কথা শিখাতে মূলত আমরাই দায়ী। কেননা আপনারা খেয়াল করে দেখবেন বাবা ছেলের সামনে ঘরে বসে যখন ফোনে কথা বলেন তখন তিনি নিজেকে কোনো একটা বিপদ থেকে বাঁচাতে গিয়ে ফোনে মিথ্যা বলেন আমি তো বাসায় নেই আমি তো জিন্দাবাজারে (উদাহরণস্বরূপ) আছি। আমাদের সন্তান কি শিক্ষা অর্জন করবে বাবার কাছ থেকে। সেও বড় হওয়ার সাথে সাথে কিভাবে অন্যায় করলে মিথ্যা বলে বাঁচা যায় সে কৌশল অবলম্বন করবে এবং মিথ্যার প্রতি এক ধরনের আসক্তি জন্মাবে এবং তার প্রবণতা বেশী মাত্রায় দেখা যাবে। পরিবারে, বাহিরে এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। একটি পরিবার হয়তো ভালো অথবা কাল হয়ে দাড়াতে পারে তাদের সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য। “শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” প্রচলিত কথাটির সাথে আমি সমর্থিত হতে পারলাম না। আমি বিনয়ের সাথে বাক্যটিকে প্রত্যাখ্যান করলাম। তবে বাক্যটির পূর্ণতা এরকম হবে “সু-শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড”। কারণ প্রত্যেকটি বিষয়ের একটি খারাপ এবং একটি ভালো দিক থাকে! শিক্ষা ব্যবস্থায়ও আছেঃ সু-শিক্ষা ও কু-শিক্ষা। একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে কু-শিক্ষা নয় সু-শিক্ষার প্রয়োজন। তাই আমরা চেষ্টা করবো আমাদের সন্তানদেরকে উপরোক্ত উদাহরণগুলোর বাস্তবপ্রয়োগ থেকে মুক্ত রাখতে। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে এক ধরনের গাঠনিক, ব্যবহারিক, আচরণগত, বৈষয়িক বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। আমরা আমাদের সন্তানদেরকে বিচক্ষণ হওয়ার পেছনে তাদের উৎসাহী করে যাবো। তাদেরকে প্রত্যেকটি ভালো কাজের জন্য তাদের পাশে থেকে তাদেরকে সাপোর্ট করে যাবো। কিন্তু তাদের অবশ্যই খারাপ কাজগুলোতে বাধা প্রদান করবো। তাদের যেকোনো ভালো শিক্ষাই দেই না কেনো তাদেরকে প্রত্যেকটি বিষয়ে মানবতা, সত্য ও ন্যায় শেখানোর প্রচেষ্টায় অবিরাম থাকবো। কারণ আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ তার পথচলার উপর নির্ভর করবে।
মো.নাঈমুল ইসলাম
সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক।
শিক্ষার্থীঃ সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd