সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২৩
অমিতা বর্দ্ধন :: সমাজ বিবর্তনের ফলে অনেক চিত্র ই বদলে যায় । যা কখনো উচিৎ আবার কখনো অনুচিত বলে বিবেচিত ।
আজ আমি আমার সেবিকা জীবনের দুটি চিত্র তুলে ধরেছি যার মধ্য দিয়ে তখন কার সেবার দিক নির্দেশনার চিত্র অত্যন্ত প্রখর ভাবে সহজেই অনুমেয় হবে বিজ্ঞ জন্ দের বিবেকের বিচারে এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস । আমি আর ও কয়টি তখনকার সেবার নমুনা দিচ্ছি — ১ । আমরা ওয়ার্ডে ডিউটি তে এসে ই আগে দায়িত্ব ভার বুঝে নিয়ে রোগীর বিছানা ( Bed making ) করতে যেতাম , কারন কোন রোগীর কি রকম বিছানায় থাকা উচিৎ সেটা একজন নার্স ই জানে । যেহেতু একমাত্র নার্সই সর্ব ক্ষন রোগীর কাছে থাকে । একটি মা যেমন তাঁর শিশুকে একা ফেলে যায় না তেমনি একজন নার্স ও রোগীকে একা ফেলে যায় না ।
.২ । জ্বর মাপা , পালস নির্ণয় করা সাথে জেনারেল কন্ডিশন ।
৩ । মেডিকেশন ( টেবলেট ও ইনজেকশন ) দেওয়া ।
৪ । অজ্ঞান ও অপারেশন রোগীদের Mouth care দেওয়া । এবং
৫ । Rise Tube দেওয়া অজ্ঞান রোগীদের ও বাচ্চাদের নল দিয়ে Feeding দেওয়া । ইত্যাদি করতে হতো । টিচার আসতো ভিজিট করতো ।
আরও অনেক কিছু করতে হতো । Temperature chart o Intake output chart Maintain করতে হতো । এখন শুধু মেডিকেশন দেওয়া হয় ।
কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন আর সে সেবা নেই ।আধুনিকতার বা ডিজিটালাইজেশনে সব উধাও !! রোগীর লোকেরা এখন দিচ্ছে । ছবিতে আমি একটি ব্রেইন স্ট্রোক রোগীকে Feeding দিচ্ছি । কারন কিছু নিয়ম আছে যা নার্স জানে তা অন্য মানে মেডিকেল parson ছাড়া অন্য কেউ জানে না । একটু অনিয়ম হলে রোগীর মৃত্যু ও হতে পারে । তাই আমাদের করত হতো ।
অপারেশন রোগীদের ডাক্তার ড্রেসিং করে যেত কিন্তু পরের কাজ আমাদের ই করতে হতো ছবিতে আমি করছি ।
যাক আমার নার্সিং জীবনের সামান্য বিবরণ তুলে ধরতে পারায় তৃপ্তি ও পুলকিত হচ্ছি । কালের স্রোতে আরও কতো পরিবর্তন – বিবর্তন আসবে কে জানে !! তবে শান্তি পাচ্ছি ঈশ্বর যে আমাকে সেই সে ই সেবা দান করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছিলেন বলে । আমার সৌভাগ্য ছিল বলেই সেই মহৎ ও মহান কাজ করতে পেরেছি । আর্ত – পীড়িত মানুষের সেবা সবাই করতে পারে না ঈশ্বরের কৃপা ছাড়া । কর্মে ই প্রকৃত ধর্ম । মানুষ তাঁর কর্মেই বেঁচে থাকে অনন্ত কাল , আর মহাকাল তাঁর সাক্ষী হয়ে থাকে । আমার জীবন সার্থক কিনা জানিনা শুধু জানি আমার যে ব্রত ছিল শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ , সারদা মা ও স্বামী বিবেকানন্দ “” জীবে প্রেম করে যে জন সে জন সে বিছে ঈশ্বর ” । মানব সেবাই পরম ধর্ম । সেই সেবাতে যেন অহং বোধ না থাকে ।
লেখক — কবি ও প্রাবন্ধিক ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd