গোলাপগঞ্জে সুরমা নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিং, হুমকির মুখে মাদ্রাসা-এতিমখানা!

প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৩

গোলাপগঞ্জে সুরমা নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিং, হুমকির মুখে মাদ্রাসা-এতিমখানা!

নিজস্ব সংবাদদাতা: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সুরমা নদী থেকে অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন কারীদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রেহাই পাচ্ছে না অবৈধ ড্রেজিং’র কবল থেকে মাদ্রাসা ও এতিমখানা। ড্রেজিং এর কারণে নদীর তীরবর্তী মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভবনে দেখা দিয়েছে ফাঁটল।

 

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসা ও এতিমখানা রক্ষায় প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে দরখাস্ত প্রদান করলেও থেমে নেই বালু খেকোদের অপকর্ম। পৌর এলাকা সংলগ্ন গোলাপগঞ্জ থানার নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলীর প্রতিষ্ঠিত হযরত শাহজালাল (রহ.) লতিফিয়া মাদ্রাসার এতিম খানা ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রধান শিক্ষক মাওলানা মাহফুজুর রহমান ও সেক্রেটারী আলহাজ্ব শাফিউল হক চৌধুরী কর্তৃক স্বাক্ষরিত সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর গত ১৭ আগষ্ট অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধে দরখাস্ত প্রদান করা হয়।

 

দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়- মাদ্রাসার অতি নিকটে কে বা কারা অবৈধভাবে সুরমা নদী থেকে মাটি উত্তোলন করছে।

 

যার ফলে মাদ্রাসা- গোলাপগঞ্জ বাজার ও বিভিন্ন সরকারী- বেসরকারী স্থাপনা সুরমা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। অবৈধ ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

 

এদিকে, গোলাপগঞ্জে সুরমা নদীতে লিজ বহির্ভূত জায়গা থেকেও বালুখেকোরা ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

 

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, সুরমা নদীর লিজ আওতাভুক্ত মৌজার নাম ও খতিয়ান দাগ হলো- জে এল নং হাতিমনগর/০২ দাগ নং- ২৭১২-৪৭৬৫, বাঘা/০৩ দাগ নং- ৬৪৯৯-৬৫৭২, স্বরস্বতি/০৬ দাগ নং- ১, ফুলবাড়ী/২৯ দাগ নং- ১-২৫০১, হাজিপুর/৩০ দাগ নং- ১-২০০১।

 

তবে লিজ বহির্ভূত জায়গা থেকে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছর নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিলীন হওয়ার পথে অনেক মসজিদ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বালুখেকোদের বিশাল সিন্ডিকেট থাকায় তাদের নিষেধ করতে ভয় পান নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। নিষেধ করতে গেলে হতে হয় তাদেরকে হামলার শিকার। গত ৫ আগস্ট সুরমা নদীর রুইঘর এলাকায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে বালুখেকো চক্রের মারধরের শিকার হন স্থানীয় তিন যুবক। তাদেরকে নৌকায় আটকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

 

বালু তুলতে নিষেধ করায় গত ৫ আগস্ট লাঠি নিয়ে বালুখেকো চক্র মারধর করে স্থানীয় কয়েক যুবককে।

 

ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন- এই চক্রটি খুবই শক্তিশালী। প্রতি বছর তারা অবৈধ ভাবে বালু তুলে মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছে। তাদের সাথে কথা বলতে গেলে হামলার শিকার হতে হয়। এদেরকে থামিয়ে না রাখলে যত সময় যাবে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বাড়তে থাকবে।

 

এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অভিজিৎ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন- লিজ আওতাভুক্তের বাইরে যে সকল এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হবে খবর পেলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। গত কয়েকদিন আগে মারামারির খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..