সিলেটে হরতাল মানছেন না কেউ, যান চলাচল স্বাভাবিক!

প্রকাশিত: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০২৩

সিলেটে হরতাল মানছেন না কেউ, যান চলাচল স্বাভাবিক!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে ‘অহিংস’ হরতালের ডাক দিয়েছে প্রকৌশলী ম ইনামুল হকের নেতৃত্বাধীন ‘সর্বজন বিপ্লবী দল। আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দিনব্যাপী এ হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

 

তবে এ হরতাল সিলেটে মানছেন না কেউ। আজ সকাল থেকেই সিলেটের সব সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

 

সোমবার রাতে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন- মঙ্গলবার সকালে যথারীতি সিলেটের সব রাস্তায় আমাদের পরিবহন শ্রমিকরা বের হবেন এবং স্বাভাবিকভাবেই সারা দিন যানবাহন চলবে। এমন হরতাল আমাদের কেউ মানবেন না।

 

সকালে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হওয়া মহানগরের শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নাজাত আহমদ বলেন- ‘এটা কীসের হরতাল? যে দল হরতাল ডেকেছে তার নাম আগে কখনো শুনিনি। এ হরতাল কেউ মানবে না।’

 

মনির আহমদ নামের এক সিএনজি অটোরিকশাচালক বলেন- ‘পেট কি আর হরতাল মানে? দিন শেষে পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে হয়। গাড়ি নিয়ে বের না হলে পাতে ভাত জুটবে না।’

 

গত ১২ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের দাবিতে দলটির আয়োজিত রোডমার্চ ও পথসভায় এ ঘোষণা দেন দলের প্রধান ম ইনামুল হক।

 

নিজের ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে মন্তব্য করে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে ২২ আগস্ট দেশব্যাপী পূর্ণদিবস অহিংস হরতাল পালনের আহ্বান জানান তিনি।

 

হরতালের বিষয়ে সর্বজন বিপ্লবী দলের প্রধান লিখেছেন- আমাদের কথা, বাংলাদেশের রাজনীতি দেশের ভেতরে বা বাইরে থেকে কারোর স্বার্থে ‘রিমোট কন্ট্রোল’এ আর নয়। দেশের রাজনীতি হবে জনগণের স্বার্থে, জনগণের ইচ্ছায়। বাংলাদেশ হবে ‘জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ’। এ দেশে রাজা নেই, তাই কোন প্রজাও নেই। এ দেশটা কারোর বাপেরও নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এ দেশ সকলের, সর্বজনের। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া, ডিজিটাল আইন বাতিল ও ‘জাতীয় সরকার’ এর অধীনে ভোটকেন্দ্র দখলমুক্ত, কালো আইন, কালো টাকামুক্ত নির্বাচন করার লক্ষ্যে ১৭ দফা রোড ম্যাপ দিয়েছি।

 

তিনি আরও বলেন- আমরা স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি নই, পরাজিতও নই, আমরা দেশপ্রেমিক শক্তি। বাংলাদেশকে এক ব্যক্তির শাসন থেকে মুক্ত করতে আমরা আওয়ামী বিএনপিসহ সকল দলের গণতন্ত্রকামীদেরকে আমাদের হরতাল সমর্থন করতে আহ্বান করছি।

 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালকের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক সংগঠন সর্বজন বিপ্লবী দল। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে দলীয় প্রচারপত্র বিলি করার সময় দলটির আহ্বায়ক ম ইনামুল হককে কৃষক লীগ কর্মীর মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনায় আসে সর্বজন বিপ্লবী দল।

 

এ দলের প্রতিষ্ঠাতা ম. ইনামুল হক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ায় তাঁর বাবা সে সময় হানাদার বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন ও জেল খাটেন। ইনামুল হক ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। ইংল্যান্ডের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওয়াটার রিসোর্সেস সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স অব সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৮৫-৮৬ সালে।

 

তিনি হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট ও পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ২০০৮ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ইনামুল হক একজন লেখক, কবি, গবেষক ও সংগঠক। বর্তমানে তিনি জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ও সর্বজন বিপ্লবী দলের আহ্বায়ক।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..