সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও নান্দনিক ডিজাইনে দেড় বছর আগে নির্মাণকাজ শেষ হয় সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের। নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতার কারণে এটি উপমহাদেশের অন্যতম সুন্দর বাস টার্মিনাল হিসেবে গণ্য হচ্ছে। প্রায় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনালটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখার পর নতুন করে চলছে সমাপনের কাজ।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলক বাস চলাচল শুরু হলেও পরে টার্মিনালটি উদ্বোধন করা হয়নি। টার্মিনাল ভবনের আস্তরে ফাটল ও গ্লাস ফিটিংসের কাজে ত্রুটি ধরা পড়ায় নতুন করে ফিনিশিং কাজ শুরু হয়েছে। কবে টার্মিনালটি উদ্বোধন করা হবে নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ফলে বাস টার্মিনালের উদ্বোধন নিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা।
সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ বলেন, ‘আমাদের অফিসের পাশ দিয়ে পানি পড়ে। সিলিকন না দেওয়ায় ভবন বেয়ে পানি আসে। থাই গ্লাসগুলো একটু বাতাস হলেই নড়তে থাকে। আমরা এসব বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি।’
সরেজমিনে টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টার্মিনাল ভবনে কাজ করছেন শ্রমিকরা। কারুকার্যময় লাল ইটের দেয়ালে ধুলো জমেছে। টার্মিনালের পূর্বদিকে কিছু জায়গায় ভবনের আস্তর খসে পড়েছে। তিনতলা ভবন বেয়ে পানি টার্মিনালের ভেতরে চলে এসেছে। ইট রঙের স্টিলের ছাউনিতে জং পড়েছে। যাত্রীদের জন্য প্রায় ১ হাজার ৫০০ আসনের বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের অনেক স্থানে পানি জমে থাকতেও দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, পাশের বিশাল সড়কের পুরোটা জুড়েই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে শত শত গাড়ি। সড়কজুড়ে এলোপাতাড়ি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।
জানা গেছে, সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন দূরপাল্লার প্রায় পাঁচশ বাস ছেড়ে যায়। তারচেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক বাস চলাচল করে আন্তজেলা রুটে। টার্মিনালে আধুনিকায়নের কাজ চলায় এই বাসগুলো সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় এই সড়কে সবসময়ই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
সিসিক সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট–এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সিলেট সিটি করপোরেশন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রায় ৮ একর জমির ওপর এই টার্মিনাল নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৫৬ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা। নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় টার্মিনাল ভবনের ব্যয় অনেকটা বেড়ে গেছে।
টার্মিনালের বহির্গমন ভবনের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৩০০ ফুট। এই অংশে ৪৮টি বাস একসঙ্গে দাঁড়াতে পারবে। এ ছাড়া যাত্রীদের বসার জন্য রয়েছে ৯৭০ আসনের বিশাল হল। রয়েছে ৩০ আসনের ভিআইপি কক্ষ, ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ। সিসিক সূত্র জানিয়েছে, বাস টার্মিনাল আধুনিকায়ন, ডাম্পিং গ্রাউন্ড নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার পথে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজ বলেন, টার্মিনালটি পরীক্ষামূলক চালুর সময় নানা অসংগতি ধরা পড়ে। এসব অসংগতি দূর করার কাজ চলছে। কিছু কিছু সমস্যা আছে সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান করেই শিগগির টার্মিনালের উদ্বোধন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd