নাম রাখা হয়েছে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের

প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩

নাম রাখা হয়েছে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে সৌম্য দেবনাথ, মৃগাঙ্ক দেবনাথ, মাধুশ্রী দেবনাথ ও শিবরঞ্জনী। গতকাল বুধবার রাতে এই নামকরণ করেন তাদের বাবা সত্যরঞ্জন দেবনাথ। তারা এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ রাসেল বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
গত শুক্রবার সকালে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চার সন্তানের জন্ম দেন সত্যরঞ্জন দেবনাথের স্ত্রী মমতা দেবী (২৭)। ২০১৬ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁদের পাঁচ বছরের আরেকটি মেয়েসন্তান রয়েছে। চার নবজাতকের দুজন ছেলে ও দুজন মেয়ে।
সত্যরঞ্জন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের বাসিন্দা। মমতা দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হলে ১০ সপ্তাহের সময় জানতে পারেন, তাঁর গর্ভে একসঙ্গে ভ্রূণ বড় হচ্ছে। এর পর থেকে স্ত্রীকে আলাদাভাবে দেখভাল করতেন সত্যরঞ্জন। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ৪০ সপ্তাহর স্থলে ৩০ সপ্তাহে ব্যথা উঠলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চার নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়।
শিশুদের নাম রাখার বিষয়ে সত্যরঞ্জন দেবনাথ বলেন, তাঁর ছোট ভাই ও ভাগনি মিলে ২৮টি নামের মধ্যে চারটি নাম নির্বাচন করেছেন। এর মধ্যে দুই ছেলের নাম সৌম্য ও মৃগাঙ্ক রাখা হয়েছে। সৌম্য নামের অর্থ শান্ত ও সুন্দর, মৃগাঙ্ক হলো চাঁদের একটি নাম। অন্য দুই মেয়ের নাম রাখা হয়েছে মাধুশ্রী ও শিবরঞ্জনী। মাধুশ্রী অর্থ সৌন্দর্য ও শিবরঞ্জনী নামের অর্থ সুন্দর মেয়ে।
সত্যরঞ্জন বলেন, রীতি অনুযায়ী শিশুর জন্মের ছয় দিনের দিন নামকরণ করা হয়। সে অনুযায়ী বুধবার রাতে শিশুদের নামকরণ করা হয়েছে। চার শিশুর মধ্যে দুজনের ওজন কম ও শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কিছুটা সমস্যার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এর মধ্যে গতকাল সকালে চিকিৎসকেরা একজনের জন্ডিসের লক্ষণের কথাও জানিয়েছেন। তার পরীক্ষার জন্য একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চার শিশুর মধ্যে দুজনকে নবজাতকের বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্রে (স্ক্যানু) রাখা হয়েছে। অন্য দুজনকে স্ক্যানু যন্ত্রের বাইরে রাখা হয়েছে। স্ক্যানু যন্ত্রে রাখা দুজনের নিজ থেকে অক্সিজেন নিতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। তাদের স্ক্যানু থেকে বের করে বাইরের পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। জন্মের সময় চার শিশুর মধ্যে দুজনের ওজন ছিল ১ হাজার ১০০ ও ১ হাজার ২০০ গ্রাম। অন্য দুজনের ওজন ৯৫৫ ও ৯৩০ গ্রাম ছিল। ওজন কম থাকা শিশু দুটির কিছু জটিলতা রয়েছে।
এ ছাড়া চার শিশুকে রক্ত দেওয়ার জন্য এর মধ্যে রক্ত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। চার শিশুর মধ্যে দুজনের রক্তের গ্রুপ ‘ও পজিটিভ’ এবং অন্য দুজনের ‘বি পজিটিভ’। গত মঙ্গলবার রাতে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে তাদের জন্য রক্ত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। তবে তাদের শরীরে এখন পর্যন্ত রক্ত দেওয়ার দরকার হয়নি।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, চার নবজাতকের চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে দুজনকে স্ক্যানু যন্ত্রের বাইরে রাখা হয়েছে। অন্য দুজনের নিজ থেকে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হওয়ায় স্ক্যানু যন্ত্রে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া চার নবজাতকের মায়ের দুধ খাওয়ার সক্ষমতা হয়নি। এ জন্য স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2023
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..