সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার সংলগ্ন কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমি দখল করে বালু ভরাট করছেন সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতা। বহূমূখি সমিতির নাম দিয়ে এই দখল ও ভরাট চলছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মিরাজ আলী, রতন মিয়া, সালেহ আহমদ ও সূর্য লাল নামের কয়েকজন বহুমুখি সমবায় সমিতির নাম দিয়ে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসা গোচারণ ভূমি জোরপূর্বক দখল করে বালু ভরাট শুরু করেছেন। সহযোগিতায় খাস জায়গা দখলে নিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ভরাট করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার এলাকার ১২ গ্রামের বাসিন্দারা খাস জমিতে মাটি ফেলতে আপত্তি দিলে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর চৌধুরী অবশ্য বলছেন, রেকর্ডকৃত জায়গায় মাটি ফেলা হয়েছে, সরকারের একইঞ্চি জায়গায়ও মাটি ফেলা হয় নি। সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করার চ্যালেঞ্জ দিয়ে তিনি বলেছেন, এখানে আমাদের ১৬ কেয়ার জমি রয়েছে। প্রতিহিংসার বসে কতিপয় লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট কথা বলছে এবং এলাকায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।
সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, রফিনগর ইউনিয়নের সুনামপুর (১১) মৌজার ৪৬ নম্বর দাগে ১ নম্বর খতিয়ানে ১৩.১৩ একর সরকারি খাস জমি রয়েছে। নামজারী বাদে আছে ১০.৪৩ একর জমি, যা সরকারের দখলে রয়েছে।
ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জহুর আহমদ জানান, সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে ু মাটি ফেলার খবর পেয়ে সরেজমিন গিয়ে বালু মাটি ফেলতে নিষেধ করে এসেছি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রায় এক একর জমি বালু মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের মৌখিক নিষেধের পরও বালু ভরাটের সরঞ্জাম ও পাইপ সরানো হয়নি।
রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজুয়ান হোসেন খান বলেন, এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে জাহাঙ্গীর চৌধুরী ভুয়া সমিতির নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে সরকারি জমি ভোগদখলের পাঁয়তারা করছেন। এটা এলাকার গো—চারণ ভূমি। শুকনা মৌসুমে এই ভূমি খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বৈশাখ মাসে আগাম বন্যা দেখা দিলে এখানে ধানের খলা হয়।
রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র তালুকদার বলেন, বহুমুখী সমিতি’র রেজিষ্ট্রেশন নেই। জাহাঙ্গীর চৌধুরী সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে এলাকার স্বার্থ বিরোধী কাজ করছেন। উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় জাহাঙ্গীর চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকারি ভূমি দখলের বিষয়টি উত্থাপন করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রতন মিয়া জানান, সরকারি কোন জমিতে মাটি ফেলা হয়নি। জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পিতাসহ ৩ টা অংশে প্রায় সাড়ে ১৭ কেয়ার জমির দলিল আমাদের রয়েছে। সমিতি ভুয়া নয়, রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়াধীন।
দিরাইয়ের সহকারি কমিশনার ভূমি (এসিল্যন্ড) জনি রায় জানান, তহশিলদার সরেজমিন গিয়ে নিষেধ প্রদান করেছেন। আইন শৃংখলা কমিটির সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউএনও মহোদয়ের পরামর্শে সার্ভেয়াররা জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd