সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২৪
সন্দীপ রায় নীল :: প্রতিদিন ঠিক এই সময়ে মেয়াও মেয়াও শব্দ করে রান্নাঘরের দাওয়ার পাশে এসে উঁকি দেয় মেনিটা । সবাই ব্যাপারটা অগ্রাহ্য করে গেলেও বাড়ির ছোট বউ শ্রীমা ব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে পারে না। জমিদার বংশ। বর্তমানে বিষয় আশয় সেরকম না থাকলেও রোজ মাছ মাংসের প্রচলন এ বাড়িতে আগাগোড়াই। আগে চাকরবাকর সবই ছিল, কিন্তু এখন শুধু একজন কাজের মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। তাই, শ্রীমাও আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের বউয়ের মতো সব কাজেই হাত লাগায়। সবার খাওয়া শেষে সব এঁটো কাঁটা এক জায়গায় জড়ো করে সরকার বাড়ির এই ছোট বউ একটা পাতায় করে দিয়ে আসে মেনিটার কাছে জামরুল গাছের তলাটায়। সঙ্গে একটু জলও দেয়। সবটুকু খেয়ে সেই যে মেনি উধাও হয় আবার দেখা মেলে পরের দিন ঠিক দুপুর বেলা। ঘটনাটা প্রায় মাস সাতেক ধরে চলছে।
আজ কয়েকদিন শ্রীমার খুব অসুখ।ডাক্তার সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে বলে গেছেন।তাছাড়া দুর্বলতার জন্য বিছানা ছেড়ে উঠতেও পারছে না। আলতো ঘুমের মধ্যেই মেনিটার চিৎকার শুনতে পাচ্ছে,” মিয়াও মিয়াও…”। বাড়িতে এত মানুষ অথচ সেদিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। কেউ একটু..
ওঠার চেষ্টা করে, পারে না। অবশ লাগছে নিচের দিকটা।
হঠাৎ আওয়াজটা খুব কাছে মনে হয়। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে দুধেল সাদা মেনিটা তার খাটের পাসে জানালায় বসে আছে। তবে চোখদুটো বড্ডো মায়াময় লাগে।কই,আর চিৎকার করছে না তো,শুধু একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
এক মুহুর্তে বুকটা মোচড় দিয়ে যায়।এখন মেনিটার চোখদুটো অবিকল তার পাপানের চোখের মতোই লাগছে।অবোধ চোখদুটো যেন বলতে চাইছে ,মা,খেতে দেবে না?
আজ আট মাস হলো মাত্র তিনদিনের জ্বরে পাপান…। আর তার পর থেকেই এর আনাগোনা।
টেবিলে রাখা নিজের খাবারটাই এগিয়ে দেয় । মেনিটা লাফ দিয়ে এসে খেতে থাকে খাবারটা। চোখে মুখে পরম প্রশান্তি নিয়ে ডেকে ওঠে..মি.. ইয়াও ও ও ও।
শ্রীমার চোখ দুটো ভিজে যায় এক অজানা মমত্বে। সন্দীপ রায় নীল, পূর্ব বর্ধমান,পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd