সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে হামালার-ভংচুরের ঘটনায় একের পর এক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। সোমবার হামলার-ভাংচুরের ঘটনায় থানায় ও আদালতে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই চার মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, এমপি সহ ১০৮১ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তবে নির্দোষদের আসামি না করতে আহবান জানিয়েছেন সিলেট বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এই ধরনের কোন প্রমান পাওয়া যায় তবে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সিলেট জেলা বিএনপি।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে হামলার ঘটনায় মামলায় আসামি ১৩৬ জন। চৌহাট্টার হামলার ঘটনায় ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা। নগরীর দরগাগেইট এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, এমপি সহ ৫৮৬ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা। গোলাপগঞ্জে পুলিশ বিজিবি ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৪) এর স্ত্রী খাদিজা মামলায় আসামি ২২৯।
নগরীর উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে হামলা-গুলির অভিযোগে এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় আসামী করা হয়েছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ শীর্ষ নেতাদের। সোমবার মহানগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের চারাদিঘীর পাড় এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে রুবেল আহমেদ (৩৫) বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক সাংসদ শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সাবেক সাংসদ হাবিবুর রহমান হাবিব, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সাংসদ রনজিত সরকারসহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। আরও আসামি করেছন অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে।
এদিকে, মহানগরের চৌহাট্টা এলাকায় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে মহানগরের লোহারপাড়া আবাসিক এলাকার ২৫ নং বাসার বাসিন্দা আব্দুল মতিন বাদি হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুনু মিয়া। মামলায় আসামি হিসেবে ৮০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে ও অজ্ঞাত রাখা হয়েছে ৪০-৫০ জনকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য কয়েকজন আসামি হলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিজিত চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি শামীম), মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ।
এছাড়া নগরীর দরগাগেইট এলাকায় ছাত্রজনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, এমপি সহ ৫৮৬ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২৬ আগস্ট) সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নগরীর কাজিটুলা এলাকার মাহবুব হোসাইন। মামলায় ৮৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
রোববার রাতে গোলাপগঞ্জে পুলিশ বিজিবি ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৪) এর স্ত্রী খাদিজা মাহিরুল (মামলা নং-১০-২৫-০৮-২০২৪ ইংরেজি বাদী হয়ে দায়ের করেন। এই মামলায় প্রধান আসামীকে করা হয় সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদকে। এছাড়াও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি এলিম, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল সহ মোট ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১০০/১১০ জনকে আসামী করা হয়।
এদিকে এক বিবৃতিতে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর বর্বর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তাদের বিচার অবশ্যই হবে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কোন অবস্থাতেই যেন কোন নির্দোষ ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানির শিকার না হয়।
সিলেট জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা হচ্ছে, কোন অবস্থাতেই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারনে কাউকে আসামী করা যাবেনা। যদি এই ধরনের কোন প্রমান পাওয়া যায় তবে সিলেট জেলা বিএনপি সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd