সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৪
ক্রাইম প্রতিবেদক: সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গতকাল ২৬ আগষ্ট ক্রাইম সিলেট পত্রিকায় “সিসিকের ইট চুরি করে যুবলীগ নেতার দেয়াল নির্মাণ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরেই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেন যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে একই দিন অথাৎ ২৬ আগষ্ট সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় একখানা সাধারণ ডায়রী দাখিল করেন সাংবাদিক মোঃ জামাল উদ্দিন, যাহার থানার ডায়রী নং- ৮১০।
জিডি সুত্রে জানা গেছে- গত সোমবার (২৬ আগস্ট) ক্রাইম সিলেট পত্রিকায় “সিসিকের ইট চুরি করে যুবলীগ নেতার দেয়াল নির্মাণ” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ হয়। উক্ত সংবাদ প্রকাশের জেরে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ওইদিন রাত অনুমান ৮:৪৫ মিনিটের সময় নগরীর ৩৭ নং ওয়ার্ড টিলার গাঁও পয়েন্টে অবস্থানরত সাংবাদিক মোঃ জামাল উদ্দিনকে দোষারুপ করতে থাকেন। ঐ সময় সাংবাদিক মোঃ জামাল উদ্দিন উক্ত সংবাদ সংগ্রহ করেন নি বলে বার বার যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলামকে বুঝাতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্দেহের জেরে নজরুল ইসলাম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ কয়েক বার সাংবাদিক মোঃ জামাল উদ্দিনকে মারতে তেড়ে আসেন এমনকি জনসম্মুখে তাকে প্রকাশ্যে প্রাননাশের হুমকি প্রদান করেন।
সাধারণ ডায়রী দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান জানান- উক্ত জিডির আবেদন পেয়েছি। আদালতে প্রেরণ করে তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। এ ঘটনায় সিলেটে কর্মরত সাংবাদিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে হুমকি দাতার শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে আওয়ামী সরকারের পতন ঘটলেও সিলেটে বন্ধ হচ্ছে না জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক নজরুল ইসলামের চাঁবাবাজি দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। সিলেট শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় তার অপ-তৎপরতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় এখনো চালিয়ে যাচ্ছে নানা অপরাধ অপকর্ম। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সিলেট জেলা বারের একজন আইনজীবীও সহ সাংবাদিকরাও।
জানা গেছে, সিলেট শাহপরাণ থানাধীন শহরতলী বাইপাস রোড এলাকাস্থ হাজীরাই মৌজায় নিজের বাউন্ডারী করা ১.২০ একর ভূমির মালিক দখলকার সিলেট জেলা বারের এ্যাডভোকেট মকসুদ আহমদ সাহান। নিজ পিতা থেকে হেবা দলিল মূলে ওই ভূমির মালিক দখলকার হন তিনি। ভুমির বাউন্ডারী পিলার ও ফটকে মূল মালিক হিসেব তার পিতার নামও লেখা রয়েছে।
সম্প্রতি এই ভূমির উন্নয়ন ও মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন এ্যাডভোকেট মকসুদ আহমদ সাহান। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী একটি চক্র। তারা হচ্ছে নজরুলের সহযোগী আবুল কালাম ও লাল মিয়া।
নজরুলের গ্রামের বাড়ি গোলাপগঞ্জের তুরুকবাগ হলেও বর্তমানে সে নগরীর শাহজালাল উপশহর ই ব্লকের ৬নং রোডের ২১৪ নং বাসার বাসিন্দা ও এছাড়াও মহনগরীর ৩৭নং ওয়ার্ডে প্রায় আড়াই কোটি টাকার সম্পত্তি জবর দখল করে সেখানে বসবাসরত রয়েছেন। আবুল কালামের বাড়ি শহরতলী শাহপরাণ থানার মুরাদপুরে তিনি আবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত এবং লাল ওরফে প্রকাশ মিয়ার বাড়ি শাহপরাণ থানাধীন পীরের চকে।
এ্যাডভোকেট মকসুদ আহমদের অভিযোগ- জেলা যুবলীগ নেতা পরিচয়ে নজরুল ও বিএনপি নেতা পরিচয়ে আবুল কালাম এবং লাল দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দিলে তারা এ্যাডভোকেট মকসুদ পরিবারকে এই ভূমি ভোগদখল ও ভোগ ব্যবহার করতে দেবে না। এ বিষয়ে তিনি শাহপরাণ থানা পুলিশকে বারবার অবহিত করেও কোনো প্রতিকার পাননি। শাসকদলের নেতা পরিচয়ে নজরুল ও তার সহযোগীরা পার পেয়ে যায়। এ বিষয়ে আদালতে পৃথক মামলাও রয়েছে নজরুলদের বিরুদ্ধে। এতে করে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে কথিত যুবলীগ নেতা নজরুল ও তার সহযোগীরা।
এ্যাডভোকেট মকসুদ আহমদ আরো অভিযোগ করেন- গত সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে নজরুল, আবুল কালাম ও লাল তাদের দলীয় ১৫/১৬ জন সশস্ত্র লোক নিয়ে তার বাউন্ডারীতে প্রবেশ করে পূর্বের ন্যায় আবারো ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা এ্যডভোকেট মকসুদ ও তার পিতাকে ধাওয়া করে।
এডভোকেট মকসুদ আহমদ বিষয়টি গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সিলেট সেনা-নিবাসের অধিনায়ককে লিখিতভাবে অবহিত করে এর প্রতিকার দাবি করেন। তিনি এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের আশু হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে নজরুল ইসলামের সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেক বর্তমানে পদবীহীন যুবলীগ নেতা দাবি করেন এবং ২০০২ কিংবা ২০০৪ সনের সিলেট জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক দাবি করে বলেন- চাঁদাবাজির সকল অভিযোগ মিথ্যা। এ্যাডভোকেট মকসুূদের দেওয়া চাঁবাবাজির ২টি মামলার রায় আমার পক্ষেই হয়েছে।
চলমান পর্ব- ০৩।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd