সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
ছাতক প্রতিনিধি :: ছাতক উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপির শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষককে প্রশাসনিক বদলী নিয়ে গ্রাম্য রাজনীতি শুরু করেছে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের নেতাকমীরা। এ রাজনীতির সাবেক ছাত্রলীগের নেতাই ভূমিকা পালন করছেন সহকারি শিক্ষক পংকজ দত্ত। সহকারি শিক্ষক পঙকজ দত্তের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তী রালী দেবনাথ এবং সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্ত-এর বিরুদ্ধে গ্রামবাসী অভিভাবকবৃন্দ, এসএমসি এবং পিটিএ কমিটি সদস্যবৃন্দ কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য দোয়ারাবাজার উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা দীন মোহাম্মদ দায়িত্ব গ্রহন করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তের মধ্যে চরম বৈরী সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। পংকজ দত্ত একই গ্রামের বাসিন্দা এবং তাঁর এক বোনও এ বিদ্যালয়ে চাকরি করায় স্থানীয় এমপির মানিকের প্রভাব ও সরকার দলীয় দাপট ফেলার চেষ্ঠা করে।বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবেশ একেবারে নেই বললেই চলে। লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তিনি প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষককে প্রশাসনিক কারণে বদলির মতামত প্রদান করেন। তাছাড়া, উপজেলা শিক্ষা কমিটি, ছাতক, সুনামগঞ্জ-এর ১৮ জুলাই ২০২২ এবং ২৯ নভেম্বর ২০২২ সালে সভায় শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তী রনী দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তকে অন্য বিদ্যালয়ে বদলির সুপারিশ করে কর্তৃপক্ষের বরাবরে একটি চিঠি প্রেরণ করেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকতা মাসুম মিয়া।
বিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানো শিখন কার্যক্রমের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, সর্বোপরি কোমল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষককে জরুরি ভিত্তিতে বদলি আবশ্যক বলে প্রতীয়মান হওয়ায় সুপারিশসহ বিভাগীয় উপ পরিচালকের বরাবরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই প্রস্তাবের পেক্ষিতে প্রধান শিক্ষিকাকে নাদামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্ত কে বনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করে ২৩ সালে ২ আগষ্ট আদেশ জারি করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা ভারপ্রাপ্ত মাহবুর জামান। এআদেশ অনুযায়ী প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী দেবনাথ স্কুলে যোগদান করলেও সহকারি শিক্ষক নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দাবী করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং বোমা মানিকের দোহাই দিয়ে পংকজ দত্ত শ্যামনগর স্কুলে কর্মরত থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গত ২৭ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তাকে একই ইউনিয়নের কহল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দেয়া বদলী আদেশের বিরুধিতা করে গত ২৯ আগস্ট বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে কিছু ভূয়া অভিভাবক জড়ো করে সংবাদ সম্মেলন করে,যা সরকারী চাকুরি আচরন বিধি পরিপন্থী কাজ করছেন। এলাকায় সরেজমিন গিয়ে জানা যায় সে সিনিয়র শিক্ষকদের ডিঙ্গিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে মরিয়া হয়ে উঠে। শ্লিপ,রুটিন, ক্ষুদ্রমেরামতসহ যাবতীয় বরাদ্দের পুরো টাকাই সে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসছে।শুধু তাই নয় কানাডা ভিত্তিক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্কুলে একটি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে এবং ল্যাব পরিচালনায় প্রতি মাসে প্রতিষ্ঠানটি ২০/২৫ টাকা অনুদান দিয়ে আসছে।এ টাকার সামান্য অংশ খরচ করে বাকি টাকা সে নিজেই ভোগ করেছে। এসব সুবিধা প্রাপ্ত পংকজ দত্ত বদলীর আদেশ পেয়ে এক শ্রেনীর ফেইস সংবাদকমী দিয়ে সম্মেলন করে কান্নার নাটক তৈরি করেন। ইতিপুর্বে সহকারি শিক্ষক পংকজ দত্ত বিদ্যালয়ে প্রভাব বিস্তার,পাবলিক গেদারিং ও গোপনীয়তা নষ্টের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আফিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(ঘ) উপবিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং একই বিধিমালার ৪(৩)(ঘ) উপবিধি অনযায়ী কেনো তাকে চাকুরী থেকে অপসারন করা হবে না এই মর্মে কারন দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে।কিন্তু নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এহেন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে নিয়োগ ও বদলী-বানিজ্য সহ সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।এব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহন লাল দাসকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে য়োগাযোগ করলে ফোনে রিং হচ্ছে কেউ রিসিভ করেনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd